‘‘আনন্দ, আমার পিঠ ব্যাথা করছে
গলা জ্বলছে, শূল বেদনার মতো আঘাত করছে ওই নস্ট শূকর মেদ
আমার উদরদেশে
আমি কি মাটির কাছে,
জলের কাছে, উদ্ভিদের কাছে
ফিরে যাচ্ছি আনন্দ?
আমাকে উপদেশ দাও
এই পাত্র, চীবর নাও
এসো, তোমাকে শেষ
উপসম্পদা দান করি
বহু,বহু কাল ধরে আমি
আকাশ, জল, মাটি আর নক্ষত্রলোকের পরিভ্রমণ করেছি-
আনন্দ, আজ আমার ছুটি পাবার দিন।
সমাগতদের উপদেশ দিয়ো যে
উপদেশ পাবার পরমক্ষণ তাদের শেষ হয়ে গেছে
আমার তথাগত, আমার শাক্যসিংহের এই কথা শুনে, আমি বই বন্ধ করি
গ্রন্থ, যা আমাদের পাথেয় দেয়- দেয় শান্তি, বিরাম,সমাহিতি ও আনন্দ।
আড়াই হাজার বছরের শীত ও গ্রীষ্মের আলোড়িত অপরাহ্ন, রক্তসন্ধ্যা,
রাত্রির তপ
আর শরীরের প্রবল বিক্ষেপ-
তাঁকেও কি নানামুখী রুদ্রাক্ষের মতো
বেদনা হয়ে ঘিরে ধরেছিলো?
মূক, করে দিয়েছিলো কি, তাঁর রহস্যময় অধরশোভা?
জগতের সব আম, জাম, কাঁঠাল,পলাশ,
রোজউড, রবারের বন- পান্থপাদব, ইউক্যালিপটাস, বাওবাবের মাথা ছুঁয়ে
মরণচিল কি ধীরে, অমোঘে, নেমে আসছিলো ওই রক্ত, মেদ, বসার পিঞ্জরের পানে?
আনন্দ, আমারও সমস্ত দেহে আজ প্রচন্ড দহন,
পেটের ভিতর সমস্ত নস্ট শূকর, নস্ট গাভী, নস্ট কুক্কুট ও নস্ট অজা মাস,
আশ্চর্য্য সমন্বয়ে আজ গজগজ করছে-
আমারও আজ ভয়ানক শূলবেদনা আনন্দ
আর কতদিন এই ভার বইবো আমি?
আমি কবে, মাটি, জল, আকাশ, আগুন আর উদ্ভিদের কাছে যাবো আনন্দ?