অনুপম দাশগুপ্ত একটা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। সারাদিন তার অফিসের ল্যাবে যন্ত্রের সামনে কেটে যায়। তার কাজের লোক হিসাবে বেশ সুনাম আছে। মালিক ভাস্বর রায় থেকে শুরু করে অফিসের বাস চালক কিশোরী অব্দি সকলেই তাকে পছন্দ করে।মাত্র দুই বছরের মধ্যে যথেস্ট উন্নতি ঘটেছে তার, অফিসের মেস থেকে -আধঘন্টা বাসের দূরত্বের একটা বহুতল আবাসনের ছয় নম্বর ব্লকে এগারো তলার এগারো নম্বর ফ্লাটে সে বাসস্থান পেয়েছে।তার বাড়িতে আছে একটা শোবার ঘর, একটা হল,একটা রান্নাঘর আর একটা বাতরুম। অনুপম সকাল ছটায় বিছানা ছাড়ে, সকালের হাঁটা শেষ করে সাতটায় ছোটো হাজরি খায়। নয়টায় অফিসের বাস আসে, সাড়ে নয়টায় সে অফিসের ল্যাবরেটরিতে ঢোকে। একটায় মধ্যাহ্ন ভোজন ক্যান্টিনে সেরে নেয়।সাড়ে চারটেয় এক কাপ কফি খায়। ছটায় অফিসের বাসের লাইনে দাঁড়ায়। বাড়ি ফিরে সাতটায় চান করে। নয়টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে, সাড়ে নয়টায় বিছানায় যায়। দশ মিনিট লাগে তার ঘুম আসতে, কারণ ঠিক শোবার আগে সে একটা ঘুমের বড়ি খায়। আবার ঠিক ছটায় ঘুম শেষ হয় তার- দিনের কাজ শুরু হয়। এই সব দিক থেকে ভালো, দক্ষ,অটুট স্বাস্থ্যের অধিকারী অনুপমের জীবনে একটা গোপন কথা আছে, যা কেউই জানেনা, এমনকি অনুপম নিজেও জানেনা, তা হলো যে লোকটিকে অনুপম দাশগুপ্ত বলে তার প্রতিবেশী, আবাসনের অন্যান্য অধিবাসী,তার অফিসের অন্য সাথীরা ও তার মালিক জানেন, সে আসল অনুপম দাশগুপ্তের আদলে বানানো একটি নিখুঁত রোবট, যে ভাইরাস বিজ্ঞানী অনুপম দাশগুপ্ত দুহাজার পঁচিশ সালে মাত্র সাতাশ বছর বয়সে ভাইরাসের আক্রমণে মারা যান।