61 birohini

প্রেম বা ভালোবাসা আমার কাছে এক পবিত্র শব্দ আমি মনে করি ভালোবাসা ছাড়া জীবনে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ভালোবাসার দরকার। একটা গান আছে না?? যে ভালোবাসা ছাড়া আর আছে কি?? গান টা র মধ্যে কার অর্থ গুলো খুব সুন্দর। ভালোবাসা বা প্রেম এর পরেও বিরহ বা যন্ত্রণা আছে। তবে ভালোবাসলে যদি সে সেই ভালোবাসা না পায় বা যদি সে তার ভালোবাসার মানুষ টার থেকে দূরে থাকে তবে তাকে বিরহের যন্ত্রণা ও ভোগ করতে হয়।

এই রকমই এক নারীর বিরহের কাহিনী আজ বর্ণিত করবো প্রিয় কে ছেড়ে থাকা র কষ্ট যন্ত্রণা সেই সব এই গল্পের মাধ্যমে।

বিরোহিনী নারীর কথা যে কিনা তার ভালোবাসার থেকে আলাদা হয়ে গেছে। তার প্রিয় তাকে ছেড়ে চলে গেছে তবে সে কেনো তাকে ছেড়ে গেছে তার কোনো কারণ সে দর্শাতে পারে নি। কিন্তু প্রেয়সী মনে মনে এটাই আশঙ্কা করছে যে তার বোধ হয় আর ফিরবে না। কারণ বহু মাস কেটে গেছে দিন র পর দিন সে তার প্রিয় কে ছাড়া রয়েছে তার আর ভালোলাগে না। সে তার প্রিয় র সাথে মনে মনে কত কথা কয়। কিন্তু তার প্রিয় তার একটা কথাও শুনতে পায় না কোনো উত্তর দেয় না কিন্তু সে তবুও তার সাথে অনর্গল কথা বলেই চলে। তার সখীরা তাকে প্রেমে পাগলিনী বলে কিন্তু তবুও সে তার প্রিয়র অপেক্ষায় অপেক্ষমান। প্রেয়শী নিজেই নিজেই বলতে থাকে প্রিয় আমি কি তোমার যোগ্য ছিলাম না? তুমি কি তোমার যোগ্য মত কাউকে পেয়ে গেলে? তুমি যে আমাকে ভালোবাসতে তবে কি সেটা মিথ্যে ছিল? তুমি কি ঠকালে? আমার ভালোবাসা কে? এই সব বলতে বলতে তার অবস্থা হয় করুন। সে নিজেই কান্নায় ভেঙে পড়ে সে কিছু তেই তার প্রাণনাথ এর এ হেন আচরণ সহ্য করতে পারে না। সে নিজেকে এই ভাবেই দোষারোপ করতে থাকে তার প্রিয় র ছেড়ে যাবার জন্য সে আকুল হয়ে ওঠে তার প্রিয় র সাথে বাক্যালাপ এর জন্য কিন্তু তা সে পারে না তাই সে কি করবে কার মাধ্যমে তার প্রিয় র কাছে বার্তা পাঠাবে? তাই সে প্রথমে ভ্রমর কে বার্তা প্রেরক হিসাবে পাঠাতে চায়। তাই সে কথা মত ভ্রমর কে এই কথাই বলতে বলে “ওহে ভ্রমর তুমি আমার প্রাণনাথ কে বলো তার প্রেয়সীর এই ব্যাথাতুর কাতর এই জীবন তাকে ছাড়া বিরহে যে আর দিন কাটতে চায় না। ওহে ভ্রমর তাকে কও গিয়া যে তোমার বিরহে প্রাণ দিতে চায় সে। তুমি কি কোনো দিনও বুঝবে না? প্রেমাগ্নি তে জ্বলছে সে তাও কি তুমি তার প্রতি এত টাই উদাসীন হয়ে ই থাকবে? সে যে প্রাণত্যাগ করতে দ্বিধা করবে না। তখন যে বিলম্ব না হয়ে যায়। তুমি বোঝনা প্রিয় হয়ত আর বুঝবে ও না”! বলে সে তাকে পাঠায় তার যাবার ও অনেক দিন গত হয়েছে কিন্তু তার আর কোনো উত্তর সে পায় না। ভ্রমর আর তার কাছে প্রিয় র বার্তা নিয়ে আসে না যত দিন যায় সে আরো পাগলিনী হয়ে ওঠে তার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করে।

দিন যায়, এই দিকে বিরহীনি প্রেয়সি দিন দিন দুর্বল হতে থাকে সে এক প্রকার নিরুপায় হয়ে ওঠে আর অপেক্ষা করতে থাকে তার প্রিয় র আসার তার শরীর শীর্ণ হয়ে যেতে থাকে। হাতের বালা যেন খসে পড়ার উপক্রম হয়। এলোমেলো কেশ বিন্যস্ত পরনের কাপড় ধীরে ধীরে মলিন থেকে মলিন তর ও হতে থাকে। কিন্তু সে সব দিকে তার আর খেয়াল বা নজর কোনো তাই থেকে না সে ঠিক মত নিজের ক্ষুধা নিবারণ টুকু ও করে না বলতে গেলে এক প্রকার সে উপবাস দেয় যবে থেকে তার প্রিয় তাকে ছেড়ে গেছে। তার এক প্রিয় সখি তার এই করুন নিদারুণ অবস্থা নিজের চোখে সহ্য করতে পারে না তাই সে প্রেয়সির কাছে নিজেই প্রস্তাব দেয় যে সে নিজেই তার প্রিয় র কাছে বার্তা নিয়ে যাবে। সে কথা শুনে প্রেয়শী আনন্দে সে বলে বসে তবে সেও তার সাথে যাবে। কিন্তু তার এমন অবস্থার জন্য সখি তাকে নিয়ে যেতে রাজি হয় না সে বহুবার একরকম কাকুতি মিনতি করতে থাকে কিন্তু তবুও তার সখি বলে সে একাই যাবে তাই অগত্যা তাকে তার সখি র কথাই মানতে হয়। সে ভ্রমর এর মত তাকে ও কিছু কথা বলতে বলে “হায় ও সখি প্রাণনাথ এর কষ্ট যে তার প্রেয়শী যে মরিয়া যাইমু তোরে আমি অনেক আশা নিয়ে তার কাছে পাঠাচ্ছি যদি সে কিছু বলে। ভ্রমর কে তো মনে হয় বার্তা দেয় নাই। কিছুই কয়ে নাই তাই ভ্রমর আমাকে বলতে ও আসে নাই। কোনো এই কি বার্তা দেবার নাই প্রিয় ওর? ও কি সত্যিই আমাকে ভুলে গেছে?? ও কি সত্যি কিছু বোঝে না?? যে ওর প্রেয়শী যে আর পারে না তাকে ছাড়া বাঁচতে। সারা অঙ্গ যে জ্বলে যায় তাকে কাছে না পেয়ে। সে কি আর আসবে না? আমার অঙ্গ অঙ্গে যে শুধুই তার ছোয়া লেগে আছে তার স্পর্শ না পেয়ে যে সে আরো ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। তবে কি প্রিয় তাকে ভালোবাসে নি? তার সাথে কি শুধুই ভালোবাসার অভিনয় আর ছলনা করে গেছে? তার প্রিয় র দেওয়া তাকে সব প্রতিজ্ঞা কি মিথ্যে ছিল? তাকে নিয়ে সংসার করার স্বপ্ন বাসনা সব এই কি মিথ্যে?? তবে কেনো এসেছিল তার জীবনে?? এই ভাবেই কি তার ভালোবাসা তার স্বপ্ন দিয়ে গড়া সেই সংসার সব কিছু কে এই ভাবেই ছারখার করে দিতে? সে তার সখি কে এই বার্তাই দিতে বলে তার প্রিয় কে”। সখি তাকে আশ্বস্ত করবার চেষ্টা করতে থাকে। যাতে তার এই সখি যেন একটু ভালো থাকে। সে তার সখি কে ফিরে আসার কথা জানিয়ে তার কাছ থেকে বিদায় নেয়।

তার সখি চলে যাবার ও বহু দিন প্রায় অতিক্রান্ত বিরোহিনি প্রেয়শি সেই তার প্রিয় র জন্য অপেক্ষায় রত থাকে এই ভাবেই এক সন্ধ্যায় ঘোর ঝড় বৃষ্টি হতে থাকে সেদিন আর সে নিজেকে আটকে রাখতে পারে না সে সেই তুফান মাথায় নিয়েই কর্দ মাক্ত রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে পাগলিনী র মত উদ্ভান্তের মত ছুটতে থাকে সে কত দুর কি ভাবে যায় তার টা অজানা। কারণ তখন তার গা যে জ্বরে পারে যাচ্ছে সেই দিকে তার বিন্দু মাত্র হুস নাই পর্যন্ত। সে শুধু ই তার প্রিয় র কাছে যাবার জন্য ছুটতে থাকে একটা সময়ে পর ছুটতে ছুটতে সে ক্লান্ত অবসন্ন শরীর টা নিয়ে কাদা ভেজা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার সারা সর্বাঙ্গ ময়ে কাদাই লেপ্টে যেতে থাকে সে আর পারে না যেতে সে এখনেই থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ে সেই রাতের ঘোর বৃষ্টি র সঙ্গে তার কান্না যেন মিশে যায়। সে আস্তে আসতে মাটির সাথে মিশতে থাকে। তার মনে হয় তার প্রাণ টা বোধ বেরিয়েই যাবে কিন্তু তবুও যদি আজ তার শেষ দিন হয় যদি তার মৃত্যুও ঘটে তাও। এই বিরহীনী প্রেয়শি সে তারই প্রতীক্ষায় সেখানেই প্রহর গুনছে।

error: Content is protected !!